বাজারও হতে পারে পর্যটন কেন্দ্র ভিমরুলিতে না গেলে বুঝতে পারবেন না!

ধান-নদী-খাল এই তিনে বরিশাল। একসময় বরিশালকে বাংলার ভেনিস বলা হতো। বিভিন্ন কারণে বরিশাল বিখ্যাত হলেও ঝালকাঠি ও পিরোজপুরের ভাসমান পেয়ারা বাজারের জন্য দিনদিন পর্যটকদের কাছে এই জনপদ আরো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
ছবি- ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
ঝালকাঠি, বরিশাল এবং পিরোজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় গড়ে উঠেছে এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম পেয়ারা বাগান। ঝালকাঠি জেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ভিমরুলিতে রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভাসমান পেয়ারা বাজার। তিন দিক থেকে আসা খালের মোহনায় বসে ভিমরুলির এই ভাসমান পেয়ারা বাজার। আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুই মাস পেয়ারার মূল মৌসুম। এসময় পেয়ারার পাশাপাশি আমড়া, জাম্বুরাসহ অন্যান্য ফলও এই ভাসমান বাজারে পাওয়া যায়।

ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার ডুমুরিয়া, কাপড়কাঠি, কাঁচাবালিয়া, ভিমরুলি, হিমানন্দকাঠি, শতদশকাঠি, রামপুর, মীরাকাঠি, শাওরাকাঠি, জগদীশপুর, আদমকাঠি এবং পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার আটগড়, কুরিয়ানা, বংকুরাসহ আরও কিছু গ্রামে প্রায় ২৪ হাজার একর জমিতে পেয়ারার চাষ হয়। দেশে উৎপাদিত মোট পেয়ারার প্রায় ৮০ শতাংশই উৎপাদিত হয় এই অঞ্চলে। এসকল অঞ্চলের পেয়ারা বাগানগুলো নদী বা খালের পাশে অবস্থিত হওয়ায় খুব সহজেই নৌকা ও ট্রলার যোগে ভাসমান পেয়ারা বাজারে তারা উৎপাদিত ফল, ফসল বিক্রি করতে নিয়ে আসতে পারে। নাম ভাসমান পেয়ারা বাজার হলেও এখানে অন্যান্য ফল ও ফসল বিক্রি করা হয়ে থাকে।

ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য বরিশাল বিভাগ নদী ও খালে পরিপূর্ণ। ছোট বড় বিভিন্ন খাল রয়েছে এই অঞ্চলে। পেয়ারা বাগানগুলোও তাই খালের পাড় ঘেঁষে অবস্থিত। পেয়ারা বাগান হত নামানো থেকে শুরু করে বিক্রি করা সকল কাজই হয় নৌকার মাধ্যমে। পেয়ারা গাছ থেকে নামানোর পরে ছোট ছোট খাল গুলো থেকে একসঙ্গে অনেক নৌকা এসে ভিড় করে ভিমরুলি ও আটগড় কুরিয়ানা ভাসমান পেয়ারা বাজারে। বর্ষাকালে এই নয়নাভিরাম দৃশ্য পর্যটকদেরকে মুগ্ধ করে। একই সাথে নৌকায় ভ্রমণ আর তাজা তাজা পেয়ারার স্বাদ উপভোগ করার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে। জুলাই ও আগষ্ট এই দুইমাস হলো ভাসমান পেয়ারা বাজার দেখার উত্তম সময়। তাই আপনারা যারা এশিয়ার বৃহত্তম এই ভাসমান বাজার দেখতে আগ্রহী বছরের এই সময়ে আসার পরিকল্পনা করতে পারেন। ঢাকা থেকে সড়ক ও নৌপথে ভিমরুলি ও আটগড় কুরিয়ানা ভাসমান পেয়ারা বাজারে খুব সহজেই আসতে পারবেন।
ছবি- ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
দেশের এই ঐতিহ্যবাহী ভাসমান পেয়ারা বাজারকে রক্ষা করা এবং একে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এই অঞ্চলে পেয়ারা, আমড়াসহ অন্যান্য ফল যত বেশি আবাদ হবে ততই সমৃদ্ধ হবে এই ভাসমান পেয়ারা বাজারগুলো।

লেখক

তথ্যসূত্র
দৈনিক প্রথম আলো
ভ্রমণ গাইড ডট কম
পূর্ববর্তী পরবর্তী