ঈদ হোক ত্যাগে মহিমান্বিত

পশু কুরবানির মাধ্যমে আগামীকাল পালিত হতে যাচ্ছে মুসলমানদের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ঈদুল আজহা। এটি কেবল আনন্দের উপলক্ষ্যই নয়, বরং ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা ছড়িয়ে দেয়। সেজন্য পশু কুরবানির পেছনের মূল উদ্দেশ্যকে ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
ত্যাগের মহান শিক্ষাই এই উৎসবের মূল উপজীব্য। একটি সৌহার্দপূর্ণ মানবিক পৃথিবী বিনির্মাণের জন্য ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে ত্যাগের বিকল্প নেই। এই ত্যাগের অর্থ মনের সকল খারাপ অভিপ্রায় ত্যাগ করা, এই ত্যাগের অর্থ সব ধরনের অপকর্ম পরিহার করা, এই ত্যাগের অর্থ অন্যের প্রয়োজনে নিজের বিলাসিতা পরিত্যাগ করা এবং সর্বোপরি পরার্থে নিজের স্বার্থকে বিসর্জন দেয়া। আসুন আমরা কুরবানির এই শিক্ষাকে গ্রহণ করি।
কুরবানির ঈদ দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিপুল পরিমাণ পশু এই উৎসবের জন্য প্রস্তুত করে দেশের খামারিরা। দেশে মাংসকে সবার কাছে সহজলভ্য করার জন্য এই খাতের উন্নতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই খাতের প্রয়োজনীয় উপকরণের ব্যয় কমানো এবং ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়পক্ষের জন্য ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ জরুরী। মাংসের চাহিদার জন্য বরাবরই দেশি পশুর চাহিদা বেশি, এই ইতিবাচক বিষয়টিকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ রয়েছে।
কুরবানির পশু জবাইয়ের জন্য ধর্মীয় ও পরিবেশগত বিধিনিষেধ মানা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক নিয়মে পশু কুরবানি দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট স্থানের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় মনোযোগ দিতে হবে। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে যেন কোনো অযাচিত নেতিবাচক বার্তা তৈরি না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
এই উৎসব ধনী ও দরিদ্রের পার্থক্য ঘোচানোর দিন। তাই সামর্থ্যবানদের দায়িত্ব হল অসচ্ছল প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে মাংস ভাগ করে খাওয়া। সামাজিক উৎসবে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার মানবিক চর্চাই মানুষ হিসেবে আমাদের প্রধান গুণ। তাই আসুন ধনী-গরিবে পার্থক্য ঘুচিয়ে দিতে কুরবানির মহান শিক্ষা নিয়ে আমরা ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হই।
সবাইকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা!

- সম্পাদক
পূর্ববর্তী পরবর্তী